বিশ্বনাথ :: বিশ্বনাথের রামপাশা ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামের ঘরে ঘরেই রয়েছেন শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। যাদের বেশিরভাগই জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী। গ্রামের হাজেরা বেগম, সামিয়া, ছাবেরা, সাফিয়া, সুমানা, ইয়ামিম, তামিম আহমদ, মাসুদ, রেদওয়ান, তাহমিদ, সাহেলসহ প্রায় চার শতাধিক প্রতিবন্ধী রয়েছে এই সকল গ্রামে। বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের আমতৈল গ্রাম, উপজেলার লোকজনের কাছে প্রতিবন্ধী গ্রাম । গ্রামটি সিলেট জেলায় অবস্থিত হলেও এটি সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্ত ঘেঁষা। কেবল শুধু গ্রাম নয়, ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ডের গ্রামগুলোর একই অবস্থা ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়নের ১, ২, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি গ্রামের অন্তর্গত জমসের পুর, কোনাউরা, মাঝপাড়া, ধলীপাড়া, আমতৈল, মাখরগাঁও, ফকিটিল্লা, শেখপাড়া, দক্ষিণপাড়া ও চার নম্বর ওয়ার্ডের কাতলীপাড়া গ্রামগুলোতে ঘরে ঘরে প্রতিবন্ধী। গ্রামের এমন অবস্থা দেখে মনে হয় যেনো চিকিৎসাসেবা এখানে এসে পৌঁছায়নি। আর প্রতিবন্ধীর সংখ্যা বেশি হওয়াতে সরকারি সহায়তাও পুরোপুরি ঝুটে না বললেন গ্রামবাসিরা।
স্থানীয়রা বলেন, জন্মের পর থেকেই তাদের সন্তানরা শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন। একটু বড় হলেই হাঁটাচলা করতে তাদের অসুবিধা হচ্ছে। আর দারিদ্রতার কারণে এলাকার লোকজন চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত রয়েছেন। ফলে এক বা দুইজন নয়। গ্রামে রয়েছেন চার শতাধিক প্রতিবন্ধী! কিন্তু এর সংখ্যা থেমে নেই দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।
বিশ্বনাথ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জুবায়ের বলেন, কোনো পরিবারেই শতভাগ প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর নতুন উদ্যোগ দেশের শতভাগ প্রতিবন্ধীদের ভাতার আওতায় আনা হবে। সেটি বাস্তবায়ন হলে পরিবারের একাধিক প্রতিবন্ধীও ভাতা পাবে বলে আসে রাখছেন।
সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মণ্ডল গণমাধ্যমকে বলেন, বংশে প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মানোর একটি বৈজ্ঞানিক কারণও থাকতে পারে, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। এজন্য উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। কেবল চিকিৎসা নয়, গ্রামটিকে এই অবস্থা থেকে উত্তরণে মাল্টি সেক্টরের পদক্ষেপ জরুরি। কেননা, এলাকার লোকজনের মধ্যে শিক্ষার হার না থাকায় স্বাস্থ্য সচেতনতা নেই। যে কারণে পুষ্টিহীনতাসহ জন্মগত ত্রুটির কারণে শিশুরা প্রতিবন্ধী হচ্ছে।